ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: উন্নয়নের প্রচেষ্টা নাকি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি?

- Update Time : ১১:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৯৩ Time View
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিতর্কিত পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার মালিকানা গ্রহণ করবে, এটি পুনর্নির্মাণ করবে এবং একে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে। তার মতে, বর্তমান ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজাকে পুনর্গঠন করে সেখানে আধুনিক অবকাঠামো, উন্নত আবাসন, এবং ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি করা হবে, যা অঞ্চলটির অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। ট্রাম্প এই প্রকল্পকে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা” বলে উল্লেখ করেছেন, যেখানে পর্যটন, শিল্প এবং বাণিজ্যের সমন্বয়ে গাজাকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় একটি গন্তব্যে পরিণত করা হবে। তবে এই পরিকল্পনার সবচেয়ে বিতর্কিত দিকটি হলো, গাজার বর্তমান ফিলিস্তিনি জনগণকে অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞরা এই ঘোষণাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে আখ্যা দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব এই পরিকল্পনাকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) হিসেবে বর্ণনা করেছে, যেখানে একটি জাতিকে তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এদিকে, বেশিরভাগ আরব দেশ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে যে, ফিলিস্তিনিদের
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: বিতর্কিত উদ্যোগ নাকি উন্নয়নের প্রচেষ্টা?
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার মালিকানা গ্রহণ করবে, এটি পুনর্নির্মাণ করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে এবং পরবর্তীতে অঞ্চলটিকে একটি আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করা হবে। ট্রাম্প এই প্রকল্পকে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা“ বলে উল্লেখ করেছেন, যেখানে পর্যটন, ব্যবসা ও উন্নত আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোকে নতুন অবকাঠামো দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে এবং বিনিয়োগের নতুন সুযোগ তৈরি করা হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে, এটি গাজার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।
প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু:
✔ গাজার পুনর্নির্মাণ: গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ও অবিস্ফোরিত বোমা সরিয়ে অঞ্চলটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে।
✔ যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ: গাজার অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে।
✔ আবাসন ও কর্মসংস্থান: উন্নত আবাসন ব্যবস্থা ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
✔ আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র: গাজাকে এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যাতে এটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে।
✔ নেতানিয়াহুর সমর্থন: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে গাজার স্থিতিশীলতার জন্য কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখছেন।
তবে, এই পরিকল্পনাটি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনি নেতারা এটিকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, এটি ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে উচ্ছেদের একটি পরিকল্পনা। বেশিরভাগ আরব দেশ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সতর্ক করেছে যে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের (Two-State Solution) প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির পরিপন্থী হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন যদিও এটিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ হিসেবে উপস্থাপন করছে, তবে সমালোচকরা বলছেন যে, এটি মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রকল্প, যা দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে।
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তার এই ঘোষণার পরপরই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, আরব দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা কঠোর সমালোচনা করেছেন। অনেকে এই পরিকল্পনাকে একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের বিদ্যমান অস্থিরতাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
❌ ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়া
✔ “জাতিগত নির্মূল” হিসেবে অভিহিত: ফিলিস্তিনি নেতারা ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, এটি ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের একটি ষড়যন্ত্র।
✔ স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বিনষ্টের শঙ্কা: ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে আসছে। কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বিনষ্ট হতে পারে।
✔ বিক্ষোভ ও প্রতিরোধ: গাজা ও পশ্চিম তীরে বিভিন্ন শহরে এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে।
❌ আরব দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
✔ পরিকল্পনার প্রত্যাখ্যান: বেশিরভাগ আরব দেশ ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটিকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
✔ সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা: তারা সতর্ক করেছে যে, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা এই অঞ্চলে আরও সংঘাত ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
✔ দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধান ব্যাহত হতে পারে: এই পরিকল্পনার ফলে ইসরায়েল–ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে এবং দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের (Two-State Solution) প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে।
❌ বিশেষজ্ঞদের মতামত
✔ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের আশঙ্কা: অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। এটি জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজোলিউশন এবং গাজার অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
✔ ভূ–রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি: ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ–রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
✔ যুক্তরাষ্ট্র–আরব সম্পর্কের অবনতি: এই পরিকল্পনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
ট্রাম্পের গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনা শুধু একটি অর্থনৈতিক প্রকল্প নয়, এটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি ইস্যু। ফিলিস্তিনিরা একে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে, আরব দেশগুলো এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করছে, এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এটিকে একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের জন্ম দিতে পারে, যা শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাব গাজার পুনর্নির্মাণের নাম করে ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও কিছু মহল একে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছে, তবে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এটিকে একটি বিতর্কিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছেন। বাস্তবে এই পরিকল্পনা কতটা সফল হবে, সেটি নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: উন্নয়নের প্রচেষ্টা নাকি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি?

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিতর্কিত পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার মালিকানা গ্রহণ করবে, এটি পুনর্নির্মাণ করবে এবং একে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে। তার মতে, বর্তমান ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজাকে পুনর্গঠন করে সেখানে আধুনিক অবকাঠামো, উন্নত আবাসন, এবং ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি করা হবে, যা অঞ্চলটির অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। ট্রাম্প এই প্রকল্পকে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা” বলে উল্লেখ করেছেন, যেখানে পর্যটন, শিল্প এবং বাণিজ্যের সমন্বয়ে গাজাকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় একটি গন্তব্যে পরিণত করা হবে। তবে এই পরিকল্পনার সবচেয়ে বিতর্কিত দিকটি হলো, গাজার বর্তমান ফিলিস্তিনি জনগণকে অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বিশেষজ্ঞরা এই ঘোষণাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে আখ্যা দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব এই পরিকল্পনাকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) হিসেবে বর্ণনা করেছে, যেখানে একটি জাতিকে তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এদিকে, বেশিরভাগ আরব দেশ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে যে, ফিলিস্তিনিদের
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: বিতর্কিত উদ্যোগ নাকি উন্নয়নের প্রচেষ্টা?
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার মালিকানা গ্রহণ করবে, এটি পুনর্নির্মাণ করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবে। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসন করা হবে এবং পরবর্তীতে অঞ্চলটিকে একটি আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করা হবে। ট্রাম্প এই প্রকল্পকে “মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা“ বলে উল্লেখ করেছেন, যেখানে পর্যটন, ব্যবসা ও উন্নত আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গাজা উপত্যকার যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোকে নতুন অবকাঠামো দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে এবং বিনিয়োগের নতুন সুযোগ তৈরি করা হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে, এটি গাজার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।
প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু:
✔ গাজার পুনর্নির্মাণ: গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ও অবিস্ফোরিত বোমা সরিয়ে অঞ্চলটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে।
✔ যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ: গাজার অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে।
✔ আবাসন ও কর্মসংস্থান: উন্নত আবাসন ব্যবস্থা ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
✔ আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র: গাজাকে এমনভাবে গড়ে তোলা হবে যাতে এটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে।
✔ নেতানিয়াহুর সমর্থন: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে গাজার স্থিতিশীলতার জন্য কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখছেন।
তবে, এই পরিকল্পনাটি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনি নেতারা এটিকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, এটি ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে উচ্ছেদের একটি পরিকল্পনা। বেশিরভাগ আরব দেশ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সতর্ক করেছে যে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের (Two-State Solution) প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির পরিপন্থী হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন যদিও এটিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ হিসেবে উপস্থাপন করছে, তবে সমালোচকরা বলছেন যে, এটি মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি প্রকল্প, যা দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে।
ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তার এই ঘোষণার পরপরই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, আরব দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা কঠোর সমালোচনা করেছেন। অনেকে এই পরিকল্পনাকে একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের বিদ্যমান অস্থিরতাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
❌ ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়া
✔ “জাতিগত নির্মূল” হিসেবে অভিহিত: ফিলিস্তিনি নেতারা ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে “জাতিগত নির্মূল” (Ethnic Cleansing) বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, এটি ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের একটি ষড়যন্ত্র।
✔ স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বিনষ্টের শঙ্কা: ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে আসছে। কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বিনষ্ট হতে পারে।
✔ বিক্ষোভ ও প্রতিরোধ: গাজা ও পশ্চিম তীরে বিভিন্ন শহরে এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে।
❌ আরব দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
✔ পরিকল্পনার প্রত্যাখ্যান: বেশিরভাগ আরব দেশ ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটিকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
✔ সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা: তারা সতর্ক করেছে যে, ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা এই অঞ্চলে আরও সংঘাত ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
✔ দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধান ব্যাহত হতে পারে: এই পরিকল্পনার ফলে ইসরায়েল–ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে এবং দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের (Two-State Solution) প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে।
❌ বিশেষজ্ঞদের মতামত
✔ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের আশঙ্কা: অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। এটি জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজোলিউশন এবং গাজার অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
✔ ভূ–রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি: ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ–রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
✔ যুক্তরাষ্ট্র–আরব সম্পর্কের অবনতি: এই পরিকল্পনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
ট্রাম্পের গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনা শুধু একটি অর্থনৈতিক প্রকল্প নয়, এটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি ইস্যু। ফিলিস্তিনিরা একে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে, আরব দেশগুলো এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করছে, এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এটিকে একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের জন্ম দিতে পারে, যা শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাব গাজার পুনর্নির্মাণের নাম করে ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও কিছু মহল একে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছে, তবে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এটিকে একটি বিতর্কিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছেন। বাস্তবে এই পরিকল্পনা কতটা সফল হবে, সেটি নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।