সময়: সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ট্রাম্পের পরিকল্পনা: ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গুয়ানতানামো বে-তে স্থানান্তর

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০১:০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১৩০ Time View

b1f8cd30 cc99 11ef 9fd6 0be88a764111.jpg

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের কিউবার গুয়ানতানামো বে-তে একটি আটক কেন্দ্রের মধ্যে স্থানান্তর করবেন। এই পদক্ষেপটি সীমান্ত সুরক্ষা শক্তিশালীকরণ, অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন মামলার ক্রমবর্ধমান ব্যাকলগ মোকাবিলা করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ।

নীতির ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন সময়রেখা

২৯ জানুয়ারি, ২০২৫-এ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যা প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে গুয়ানতানামো বে-তে ৩০,০০০ অবৈধ অভিবাসীর জন্য আটক কেন্দ্র প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়। প্রশাসন ৩০ দিনের মধ্যে এই স্থানান্তর শুরু করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে প্রথমে স্থানান্তরিত ব্যক্তিরা হবে যারা ইতোমধ্যেই বহিষ্কারের আদেশ পেয়েছে কিন্তু আইনি বা লজিস্টিক জটিলতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রয়ে গেছে। হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নতুন পদক্ষেপটি এমন রাজ্যগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ কমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে যেখানে প্রচুর সংখ্যক অভিবাসী আটক রয়েছে, বিশেষ করে টেক্সাস, অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা আমেরিকান জনগণকে রক্ষা করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই অপরাধী এবং আমরা তাদের আমাদের সমাজে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে দিতে পারি না। গুয়ানতানামো একটি নিরাপদ কেন্দ্র এবং আমরা এটিকে সর্বোচ্চভাবে ব্যবহার করব।”

আটক কেন্দ্রের বিবরণ এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর গুয়ানতানামো বে ঘাঁটি, যা জিটিএমও (GTMO) নামেও পরিচিত, ঐতিহাসিকভাবে একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা সন্ত্রাসী সন্দেহভাজনদের জন্য উচ্চ-নিরাপত্তার কারাগারের থেকে পৃথক। ১৯৯০-এর দশকে, এটি হাইতিয়ান এবং কিউবান অভিবাসীদের আটক করতে ব্যবহৃত হয়েছিল, যারা সমুদ্রে ধরা পড়েছিল।

এখন, প্রশাসন এই বিদ্যমান পরিকাঠামোকে পুনরায় ব্যবহার করছে, যাতে এটি বড় সংখ্যক বন্দিদের ধারণ করতে পারে। স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের (DHS) সূত্র জানিয়েছে যে কেন্দ্রটি নিরাপত্তা ও মানবাধিকার মানদণ্ডের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য সংস্কার করা হচ্ছে। এখানে নতুন আবাসন ব্যারাক, চিকিৎসা সুবিধা, এবং আইনি পরামর্শ ক্ষেত্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে আশ্রয় আবেদন এবং বহিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

গুয়ানতানামো বে, কিউবা – এপ্রিল 7: একটি মার্কিন সেনা সৈন্য ক্যাম্প ডেল্টার প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের বন্দিরা 7 এপ্রিল, 2004 কিউবার গুয়ানতানামো বেতে বাস করে৷ 20 এপ্রিল, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বন্দিরা মার্কিন আদালতকে তাদের মামলা পর্যালোচনা করতে বলতে পারে কিনা তা বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের প্রায় 600 বন্দী আটকে রয়েছে। (জো রেডল/গেটি ইমেজ দ্বারা ছবি)

 

প্রশাসনের যুক্তি

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন এই নীতিকে প্রয়োজনীয় হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আটক কেন্দ্রগুলির উপর চাপ কমাবে এবং অভিবাসীদের অবাধে ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা প্রতিরোধ করবে। এছাড়াও, তারা দাবি করেছেন যে এটি অবৈধ অভিবাসীদের জন্য একটি শক্তিশালী সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।

ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “এদের মধ্যে কিছু লোক এতটাই বিপজ্জনক যে আমরা তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চাই না। তাই, আমরা তাদের গুয়ানতানামোতে পাঠাব।”

প্রশাসনের ‘বর্ডার সিজার’ এবং ICE-এর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যান বলেছেন, “আমরা আশা করছি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থানান্তর শুরু করতে পারব। আমি পরবর্তী সপ্তাহে কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যাব।”

আইনি মানবাধিকার উদ্বেগ

এই সিদ্ধান্তটি ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যেখানে মানবাধিকার সংস্থা, আইন বিশেষজ্ঞ এবং অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) এই পরিকল্পনাটিকে “অমানবিক এবং অসাংবিধানিক” বলে অভিহিত করেছে।

“আশ্রয়প্রার্থীদের এমন এক দূরবর্তী কারাগারে পাঠানো যেখানে তারা আইনজীবী এবং আইনি প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে, এটি মার্কিন সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন,” বলেন ACLU-এর আইনি পরিচালক ওমর জাদওয়াত।

 

আন্তর্জাতিক অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া

কিউবার সরকার এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে। প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-কানেল এটিকে “একটি নির্মম এবং অমানবিক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন। কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র গুয়ানতানামো বে-কে “অভিবাসীদের জন্য একটি বন্দিশিবিরে” পরিণত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রতিক্রিয়াগুলো মিশ্র। কট্টরপন্থী রিপাবলিকান নেতারা এই পদক্ষেপকে অভিবাসন সংকট মোকাবিলার জন্য একটি সাহসী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট নেতারা এটিকে “একটি বর্বর ও বেআইনি পরিকল্পনা” বলে নিন্দা করেছেন।

সম্ভাব্য আইনগত রাজনৈতিক পরিণতি

এই নীতির আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা বাড়ছে। নাগরিক অধিকার সংস্থাগুলো আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে এই পরিকল্পনাটিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

রাজনৈতিকভাবে, এটি আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। রিপাবলিকানরা এটিকে একটি কঠোর অভিবাসন নীতি হিসেবে তুলে ধরবে, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক হিসেবে প্রচার করবে।

গুয়ানতানামো বে-তে অবৈধ অভিবাসীদের স্থানান্তরের ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির অন্যতম বিতর্কিত পদক্ষেপ। আইন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র আপত্তির পরেও, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে। এটি সফল হবে কিনা, নাকি আইনি ও রাজনৈতিক বাধার মুখে পড়বে, তা আগামী সপ্তাহগুলোর মধ্যে স্পষ্ট হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ট্রাম্পের পরিকল্পনা: ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গুয়ানতানামো বে-তে স্থানান্তর

Update Time : ০১:০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের কিউবার গুয়ানতানামো বে-তে একটি আটক কেন্দ্রের মধ্যে স্থানান্তর করবেন। এই পদক্ষেপটি সীমান্ত সুরক্ষা শক্তিশালীকরণ, অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন মামলার ক্রমবর্ধমান ব্যাকলগ মোকাবিলা করার একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ।

নীতির ঘোষণা এবং বাস্তবায়ন সময়রেখা

২৯ জানুয়ারি, ২০২৫-এ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যা প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে গুয়ানতানামো বে-তে ৩০,০০০ অবৈধ অভিবাসীর জন্য আটক কেন্দ্র প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়। প্রশাসন ৩০ দিনের মধ্যে এই স্থানান্তর শুরু করার পরিকল্পনা করছে, যেখানে প্রথমে স্থানান্তরিত ব্যক্তিরা হবে যারা ইতোমধ্যেই বহিষ্কারের আদেশ পেয়েছে কিন্তু আইনি বা লজিস্টিক জটিলতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রয়ে গেছে। হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নতুন পদক্ষেপটি এমন রাজ্যগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ কমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে যেখানে প্রচুর সংখ্যক অভিবাসী আটক রয়েছে, বিশেষ করে টেক্সাস, অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমরা আমেরিকান জনগণকে রক্ষা করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে অনেকেই অপরাধী এবং আমরা তাদের আমাদের সমাজে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে দিতে পারি না। গুয়ানতানামো একটি নিরাপদ কেন্দ্র এবং আমরা এটিকে সর্বোচ্চভাবে ব্যবহার করব।”

আটক কেন্দ্রের বিবরণ এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর গুয়ানতানামো বে ঘাঁটি, যা জিটিএমও (GTMO) নামেও পরিচিত, ঐতিহাসিকভাবে একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা সন্ত্রাসী সন্দেহভাজনদের জন্য উচ্চ-নিরাপত্তার কারাগারের থেকে পৃথক। ১৯৯০-এর দশকে, এটি হাইতিয়ান এবং কিউবান অভিবাসীদের আটক করতে ব্যবহৃত হয়েছিল, যারা সমুদ্রে ধরা পড়েছিল।

এখন, প্রশাসন এই বিদ্যমান পরিকাঠামোকে পুনরায় ব্যবহার করছে, যাতে এটি বড় সংখ্যক বন্দিদের ধারণ করতে পারে। স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের (DHS) সূত্র জানিয়েছে যে কেন্দ্রটি নিরাপত্তা ও মানবাধিকার মানদণ্ডের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য সংস্কার করা হচ্ছে। এখানে নতুন আবাসন ব্যারাক, চিকিৎসা সুবিধা, এবং আইনি পরামর্শ ক্ষেত্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে আশ্রয় আবেদন এবং বহিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

গুয়ানতানামো বে, কিউবা – এপ্রিল 7: একটি মার্কিন সেনা সৈন্য ক্যাম্প ডেল্টার প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের বন্দিরা 7 এপ্রিল, 2004 কিউবার গুয়ানতানামো বেতে বাস করে৷ 20 এপ্রিল, মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বন্দিরা মার্কিন আদালতকে তাদের মামলা পর্যালোচনা করতে বলতে পারে কিনা তা বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের প্রায় 600 বন্দী আটকে রয়েছে। (জো রেডল/গেটি ইমেজ দ্বারা ছবি)

 

প্রশাসনের যুক্তি

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন এই নীতিকে প্রয়োজনীয় হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কারণ এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আটক কেন্দ্রগুলির উপর চাপ কমাবে এবং অভিবাসীদের অবাধে ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা প্রতিরোধ করবে। এছাড়াও, তারা দাবি করেছেন যে এটি অবৈধ অভিবাসীদের জন্য একটি শক্তিশালী সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে।

ফক্স নিউজের এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “এদের মধ্যে কিছু লোক এতটাই বিপজ্জনক যে আমরা তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চাই না। তাই, আমরা তাদের গুয়ানতানামোতে পাঠাব।”

প্রশাসনের ‘বর্ডার সিজার’ এবং ICE-এর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যান বলেছেন, “আমরা আশা করছি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থানান্তর শুরু করতে পারব। আমি পরবর্তী সপ্তাহে কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যাব।”

আইনি মানবাধিকার উদ্বেগ

এই সিদ্ধান্তটি ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যেখানে মানবাধিকার সংস্থা, আইন বিশেষজ্ঞ এবং অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) এই পরিকল্পনাটিকে “অমানবিক এবং অসাংবিধানিক” বলে অভিহিত করেছে।

“আশ্রয়প্রার্থীদের এমন এক দূরবর্তী কারাগারে পাঠানো যেখানে তারা আইনজীবী এবং আইনি প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে, এটি মার্কিন সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন,” বলেন ACLU-এর আইনি পরিচালক ওমর জাদওয়াত।

 

আন্তর্জাতিক অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া

কিউবার সরকার এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছে। প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-কানেল এটিকে “একটি নির্মম এবং অমানবিক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন। কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র গুয়ানতানামো বে-কে “অভিবাসীদের জন্য একটি বন্দিশিবিরে” পরিণত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রতিক্রিয়াগুলো মিশ্র। কট্টরপন্থী রিপাবলিকান নেতারা এই পদক্ষেপকে অভিবাসন সংকট মোকাবিলার জন্য একটি সাহসী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট নেতারা এটিকে “একটি বর্বর ও বেআইনি পরিকল্পনা” বলে নিন্দা করেছেন।

সম্ভাব্য আইনগত রাজনৈতিক পরিণতি

এই নীতির আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা বাড়ছে। নাগরিক অধিকার সংস্থাগুলো আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে এই পরিকল্পনাটিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

রাজনৈতিকভাবে, এটি আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। রিপাবলিকানরা এটিকে একটি কঠোর অভিবাসন নীতি হিসেবে তুলে ধরবে, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক হিসেবে প্রচার করবে।

গুয়ানতানামো বে-তে অবৈধ অভিবাসীদের স্থানান্তরের ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির অন্যতম বিতর্কিত পদক্ষেপ। আইন বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তীব্র আপত্তির পরেও, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে। এটি সফল হবে কিনা, নাকি আইনি ও রাজনৈতিক বাধার মুখে পড়বে, তা আগামী সপ্তাহগুলোর মধ্যে স্পষ্ট হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share