শবে-মেরাজ (২৭ রজব): গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য

- Update Time : ০৫:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৯৮ Time View
ইসলামে শবে-মেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজ এক অলৌকিক ও পবিত্র রাত, যেদিন আল্লাহ (সুবঃ) তাঁর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে তাঁর আরশে (সিংহাসনে) আহ্বান করেন এবং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আল্লাহ এই রাতের বিষয়ে কুরআনে উল্লেখ করেছেন:
১. সুরা ইসরা (বনি ইসরাইল):
اعوذ بلِلهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
سُبْحَانَ الَّذِي اَسْرَى بِعْبِدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَى الْمَسْجِدِ الْاقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ اَيْاتِنَا اِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ
“পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রিকালে ভ্রমণ করালেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশ আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।”
(সুরা ইসরা: ১)
২. সুরা নাজম:
وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً اُخْرَىِ مَِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَىِ عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَاوَىِ اِذْ يَغْشَى السَّدْرَةِ مَا يَغْشَىِ مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىِ لَقَدْ رَآى مِنْ اَيَاتِ رَبِّهِ الُكُبْرَىِ
“তিনি (নবী সা.) দ্বিতীয়বারের মতো সিদরাতুল মুনতাহার কাছে দেখেছিলেন। এর কাছেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন সিদরাতুল মুনতাহাকে ঢেকে ফেলেছিল যা তা ঢেকে ফেলেছিল। তখন দৃষ্টি বিভ্রান্ত হয়নি এবং
(সুরা নাজম: ১৩–১৮)
শবে–মেরাজ: অর্থ ও বিবরণ
শবে-মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে একটি বিস্ময়কর ও অলৌকিক রাত, যা নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন এবং ইসলামিক বিশ্বাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসরা শব্দের অর্থ হলো ভ্রমণ বা চলা এবং মেরাজ শব্দের অর্থ উচ্চে আরোহণ বা উর্ধ্বে ওঠা। এই দুটি পরিভাষার সমন্বয়ে বোঝানো হয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর এক অসাধারণ ভ্রমণ, যা কেবল শারীরিক নয়, বরং আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গভীর অর্থবহ। এই অলৌকিক যাত্রা ছিল আল্লাহ (সুবঃ)-এর বিশেষ ইচ্ছায় এবং তাঁর নির্দেশনায়, যা নবীজী (সাঃ)-এর নবুওয়াত এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহৎ বার্তা বহন করে।
কুরআনের সূরা আল-ইসরা’ এবং অসংখ্য হাদিসে এই মহামূল্যবান ভ্রমণের উল্লেখ পাওয়া যায়। ইসরার অংশে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি সকল নবীর নেতৃত্বে নামাজ আদায় করেন, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। এরপর মেরাজের অংশে তিনি সপ্তাকাশ ভ্রমণ করেন এবং আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছান। এই ভ্রমণ কেবল সময় ও স্থানের সীমাবদ্ধতা ভেঙে দেয়নি, বরং ইসলামের মৌলিক শিক্ষাগুলোকেও নতুন দৃষ্টিকোণে উপস্থাপন করেছে। শবে-মেরাজ নবীজীর (সাঃ) এক অনন্য মর্যাদার স্বীকৃতি এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর রহমতের প্রতীক।
কখন এবং কীভাবে শবে–মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল
শবে-মেরাজ, যা ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র ও অলৌকিক ঘটনা, ৬২১ খ্রিস্টাব্দে রজব মাসের ২৭তম রাতে সংঘটিত হয়েছিল। এই রাতটি মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনে একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সময়, যেখানে তিনি আল্লাহ (সুবঃ)-এর বিশেষ ইচ্ছায় ভৌত ও আধ্যাত্মিকভাবে দুটি পর্যায়ে এক অভূতপূর্ব ভ্রমণ সম্পন্ন করেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় যান এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আসমানের সাতটি স্তর অতিক্রম করে আল্লাহর আরশে পৌঁছান।
প্রথম পর্যায়: মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ
প্রথম পর্যায়ে জিবরাঈল (আঃ)-এর সঙ্গী হয়ে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এক বিশেষ বাহন, “বুরাক”-এ আরোহণ করেন। বুরাক ছিল এমন একটি অতিপ্রাকৃত বাহন, যা ঘোড়ার আকারের কিন্তু আরও ছোট এবং দ্রুতগামী। এটি মুহূর্তের মধ্যে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। বুরাকের সাহায্যে নবীজী মসজিদুল হারাম থেকে বাইতুল মাকদিসে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে তিনি সমস্ত নবীদের (যেমন ইব্রাহিম (আঃ), মুসা (আঃ), ঈসা (আঃ) প্রমুখ) নেতৃত্বে নামাজ আদায় করেন। এই ঘটনা ইসলামের ঐক্য, নবীদের মধ্যে সংযোগ এবং নামাজের গুরুত্বকে তুলে ধরে। বাইতুল মাকদিসে তাঁর এই ইমামতি নবীজীর এক অনন্য মর্যাদার প্রকাশ এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য একতা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা বহন করে।
দ্বিতীয় পর্যায়: সপ্তাকাশ ভ্রমণ
মেরাজের দ্বিতীয় পর্যায়ে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) আসমানের সাতটি স্তর অতিক্রম করেন এবং প্রতিটি স্তরে বিভিন্ন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রথম আকাশে আদম (আঃ), দ্বিতীয় আকাশে ঈসা (আঃ) ও ইয়াহইয়া (আঃ), তৃতীয় আকাশে ইউসুফ (আঃ), চতুর্থ আকাশে ইদ্রিস (আঃ), পঞ্চম আকাশে হারুন (আঃ), ষষ্ঠ আকাশে মুসা (আঃ) এবং সপ্তম আকাশে ইব্রাহিম (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রত্যেক নবী তাঁকে আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানান। নবীজী এরপর আল্লাহর ঘর “বাইতুল মা’মুর” এবং “সিদরাতুল মুনতাহা” পরিদর্শন করেন, যা স্বর্গের শেষ সীমা। এই স্থানটি এমন এক স্থান যেখানে জিবরাঈল (আঃ) থেমে যান, এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছানোর সম্মান দেওয়া হয়। এই ভ্রমণে আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য নামাজ ফরজ করা হয়, যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
নামাজ ফরজ হওয়া
শবে-মেরাজের রাতে নামাজ মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরজ করা হয়, যা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ (সুবঃ) প্রথমে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাধ্যমে উম্মাহকে দৈনিক ৫০ বার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেন। তবে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মেরাজ থেকে ফেরার পথে মুসা (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি তাঁকে পরামর্শ দেন উম্মাহর পক্ষে এই সংখ্যক নামাজ আদায় করা কঠিন হবে।
মুসা (আঃ)-এর পরামর্শে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বারবার আল্লাহর দরবারে ফিরে যান এবং নামাজের সংখ্যা কমানোর আবেদন করেন। অবশেষে এটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নির্ধারণ করা হয়। তবে আল্লাহ (সুবঃ) এমন প্রতিশ্রুতি দেন যে, যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তাকে ৫০ ওয়াক্ত নামাজের সমান সওয়াব প্রদান করা হবে। এই ঘটনা নামাজের গুরুত্ব ও আল্লাহর অসীম দয়া এবং ক্ষমার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি মুসলিম উম্মাহকে ইবাদতের প্রতি উৎসাহী হতে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে।
শিক্ষা ও গুরুত্ব
শবে-মেরাজ ইসলামি ধর্মে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ রাত, যা মুসলমানদের জন্য এক অন্যতম শিক্ষার উৎস। এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আসমানে মহিমান্বিত ভ্রমণের ঘটনা, যেখানে তিনি আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছিলেন। শবে-মেরাজের ঘটনাটি মুসলমানদের জন্য আধ্যাত্মিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এবং এর মধ্য দিয়ে মেরাজ থেকে শেখার ১৪টি শিক্ষা উপলব্ধি হতে পারে, যেগুলো জীবনযাত্রায় অনুসরণ করা উচিত। এখানে এই শিক্ষাগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. নামাজের গুরুত্ব: শবে-মেরাজের রাতে নামাজ ফরজ করা হয়েছিল, যা আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ এবং তাঁর নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার একটি অপরিহার্য অংশ এবং এটি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের এক পদ্ধতি।
২. আখলাক বা নৈতিকতা: নবী (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করার মাধ্যমে আমাদের চরিত্রের উন্নতি এবং নৈতিকতার গুরুত্ব উপলব্ধি হয়। সৎ, নিষ্ঠাবান এবং সহানুভূতির মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
৩. আখিরাতের বিশ্বাস: শবে-মেরাজে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস গভীরতর হয়। এই দৃশ্য আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, দুনিয়ার পরিণতি চিরস্থায়ী নয় এবং পরকালীন জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
৪. তাওহিদ: শবে-মেরাজে আল্লাহর একত্ববাদের গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রতিভাত হয়। এটি আমাদের মনে প্রতিস্থাপন করে যে আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি বা ক্ষমতা নেই এবং আমাদের জীবনের সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছার অধীন।
৫. সবর (ধৈর্য): নবী (সা.)-এর জীবনে বিভিন্ন সংকটের সময় ধৈর্যের প্রদর্শন আমাদেরকে কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা দেয়। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে আমাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে।
৬. ইলমের গুরুত্ব: শবে-মেরাজের ঘটনাটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইলম বা জ্ঞান লাভের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নিদর্শনগুলো বুঝতে পারি। শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার মাধ্যমে আমরা জীবনকে ভালোভাবে গড়তে পারি।
৭. সময়মত ইবাদত: নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত আল্লাহর নির্দেশ পালন করার মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সুসংহত করতে সাহায্য করে। এটি প্রতিদিনের একটি জরুরি অংশ হওয়া উচিত, যা আমরা সময়মত পালন করি।
৮. সমতা: সকল নবীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সকল ধর্ম, জাতি, ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধাবোধ তৈরী হয়।
৯. মুসলিম উম্মাহর ঐক্য: শবে-মেরাজের রাতে বাইতুল মাকদিসে সকল নবীর সঙ্গে একত্রিত হওয়া আমাদের উম্মাহর ঐক্য এবং সমবেদনা শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে এবং একে অপরকে সহায়তা করতে উৎসাহিত করে।
১০. পরম করুণাময় আল্লাহর নৈকট্য: শবে-মেরাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ প্রদান করা হয়েছে, যা মুসলমানদের জন্য একটি বিরল এবং মহামূল্যবান সম্মান।
১১. ইবাদতের প্রতি মনোযোগ: নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা আমাদের জীবনে আত্মিক শান্তি এবং সান্ত্বনা আনতে সাহায্য করে।
১২. আল্লাহর নিদর্শন: আসমান ও পৃথিবীকে আল্লাহর শক্তি ও নিয়ন্ত্রণের নিদর্শন হিসেবে দেখতে পারা আমাদের ঈমানকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
১৩. তাওবা: শবে-মেরাজ আমাদের তাওবার গুরুত্ব উপলব্ধি করায়, যার মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে ফিরে আসতে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।
১৪. ধৈর্য ও দৃঢ়তা: নবী (সা.)-এর জীবনের কষ্ট ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ধৈর্য ও দৃঢ়তার শিক্ষা পাই।
এই ১৪টি শিক্ষা শবে-মেরাজের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের জীবনে একটি বিশেষ রূপান্তরের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস, আত্মসমর্পণ, এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
শেষ কথা
শেষ কথা হিসেবে, শবে-মেরাজ ইসলামের একটি ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা আমাদের বিশ্বাস এবং আচরণকে আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। যদিও নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এই রাত উদযাপন করেননি, তবে এটি মুসলমানদের জন্য একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করার এবং তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার। এই রাতে বিশেষভাবে ইবাদত করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা, এবং তাঁর মহিমা ও নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত। এই রাতটি আমাদের জন্য আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, তাওহিদ এবং আখিরাতের প্রতি গভীর বিশ্বাস স্থাপন করার এক চমৎকার মুহূর্ত।
Please Share This Post in Your Social Media

শবে-মেরাজ (২৭ রজব): গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য

ইসলামে শবে-মেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজ এক অলৌকিক ও পবিত্র রাত, যেদিন আল্লাহ (সুবঃ) তাঁর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে তাঁর আরশে (সিংহাসনে) আহ্বান করেন এবং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আল্লাহ এই রাতের বিষয়ে কুরআনে উল্লেখ করেছেন:
১. সুরা ইসরা (বনি ইসরাইল):
اعوذ بلِلهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ
سُبْحَانَ الَّذِي اَسْرَى بِعْبِدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَى الْمَسْجِدِ الْاقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ اَيْاتِنَا اِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ
“পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রিকালে ভ্রমণ করালেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশ আমি বরকতময় করেছি, যাতে আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাই। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।”
(সুরা ইসরা: ১)
২. সুরা নাজম:
وَلَقَدْ رَآهُ نَزْلَةً اُخْرَىِ مَِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهَىِ عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَاوَىِ اِذْ يَغْشَى السَّدْرَةِ مَا يَغْشَىِ مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغَىِ لَقَدْ رَآى مِنْ اَيَاتِ رَبِّهِ الُكُبْرَىِ
“তিনি (নবী সা.) দ্বিতীয়বারের মতো সিদরাতুল মুনতাহার কাছে দেখেছিলেন। এর কাছেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন সিদরাতুল মুনতাহাকে ঢেকে ফেলেছিল যা তা ঢেকে ফেলেছিল। তখন দৃষ্টি বিভ্রান্ত হয়নি
(সুরা নাজম: ১৩–১৮)
শবে–মেরাজ: অর্থ ও বিবরণ
শবে-মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে একটি বিস্ময়কর ও অলৌকিক রাত, যা নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন এবং ইসলামিক বিশ্বাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসরা শব্দের অর্থ হলো ভ্রমণ বা চলা এবং মেরাজ শব্দের অর্থ উচ্চে আরোহণ বা উর্ধ্বে ওঠা। এই দুটি পরিভাষার সমন্বয়ে বোঝানো হয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর এক অসাধারণ ভ্রমণ, যা কেবল শারীরিক নয়, বরং আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গভীর অর্থবহ। এই অলৌকিক যাত্রা ছিল আল্লাহ (সুবঃ)-এর বিশেষ ইচ্ছায় এবং তাঁর নির্দেশনায়, যা নবীজী (সাঃ)-এর নবুওয়াত এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহৎ বার্তা বহন করে।
কুরআনের সূরা আল-ইসরা’ এবং অসংখ্য হাদিসে এই মহামূল্যবান ভ্রমণের উল্লেখ পাওয়া যায়। ইসরার অংশে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে মক্কায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি সকল নবীর নেতৃত্বে নামাজ আদায় করেন, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। এরপর মেরাজের অংশে তিনি সপ্তাকাশ ভ্রমণ করেন এবং আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছান। এই ভ্রমণ কেবল সময় ও স্থানের সীমাবদ্ধতা ভেঙে দেয়নি, বরং ইসলামের মৌলিক শিক্ষাগুলোকেও নতুন দৃষ্টিকোণে উপস্থাপন করেছে। শবে-মেরাজ নবীজীর (সাঃ) এক অনন্য মর্যাদার স্বীকৃতি এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর রহমতের প্রতীক।
কখন এবং কীভাবে শবে–মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল
শবে-মেরাজ, যা ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র ও অলৌকিক ঘটনা, ৬২১ খ্রিস্টাব্দে রজব মাসের ২৭তম রাতে সংঘটিত হয়েছিল। এই রাতটি মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনে একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সময়, যেখানে তিনি আল্লাহ (সুবঃ)-এর বিশেষ ইচ্ছায় ভৌত ও আধ্যাত্মিকভাবে দুটি পর্যায়ে এক অভূতপূর্ব ভ্রমণ সম্পন্ন করেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় যান এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আসমানের সাতটি স্তর অতিক্রম করে আল্লাহর আরশে পৌঁছান।
প্রথম পর্যায়: মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ
প্রথম পর্যায়ে জিবরাঈল (আঃ)-এর সঙ্গী হয়ে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এক বিশেষ বাহন, “বুরাক”-এ আরোহণ করেন। বুরাক ছিল এমন একটি অতিপ্রাকৃত বাহন, যা ঘোড়ার আকারের কিন্তু আরও ছোট এবং দ্রুতগামী। এটি মুহূর্তের মধ্যে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। বুরাকের সাহায্যে নবীজী মসজিদুল হারাম থেকে বাইতুল মাকদিসে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে তিনি সমস্ত নবীদের (যেমন ইব্রাহিম (আঃ), মুসা (আঃ), ঈসা (আঃ) প্রমুখ) নেতৃত্বে নামাজ আদায় করেন। এই ঘটনা ইসলামের ঐক্য, নবীদের মধ্যে সংযোগ এবং নামাজের গুরুত্বকে তুলে ধরে। বাইতুল মাকদিসে তাঁর এই ইমামতি নবীজীর এক অনন্য মর্যাদার প্রকাশ এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য একতা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা বহন করে।
দ্বিতীয় পর্যায়: সপ্তাকাশ ভ্রমণ
মেরাজের দ্বিতীয় পর্যায়ে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) আসমানের সাতটি স্তর অতিক্রম করেন এবং প্রতিটি স্তরে বিভিন্ন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রথম আকাশে আদম (আঃ), দ্বিতীয় আকাশে ঈসা (আঃ) ও ইয়াহইয়া (আঃ), তৃতীয় আকাশে ইউসুফ (আঃ), চতুর্থ আকাশে ইদ্রিস (আঃ), পঞ্চম আকাশে হারুন (আঃ), ষষ্ঠ আকাশে মুসা (আঃ) এবং সপ্তম আকাশে ইব্রাহিম (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রত্যেক নবী তাঁকে আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানান। নবীজী এরপর আল্লাহর ঘর “বাইতুল মা’মুর” এবং “সিদরাতুল মুনতাহা” পরিদর্শন করেন, যা স্বর্গের শেষ সীমা। এই স্থানটি এমন এক স্থান যেখানে জিবরাঈল (আঃ) থেমে যান, এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-কে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছানোর সম্মান দেওয়া হয়। এই ভ্রমণে আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহর জন্য নামাজ ফরজ করা হয়, যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
নামাজ ফরজ হওয়া
শবে-মেরাজের রাতে নামাজ মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরজ করা হয়, যা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ (সুবঃ) প্রথমে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাধ্যমে উম্মাহকে দৈনিক ৫০ বার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেন। তবে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মেরাজ থেকে ফেরার পথে মুসা (আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি তাঁকে পরামর্শ দেন উম্মাহর পক্ষে এই সংখ্যক নামাজ আদায় করা কঠিন হবে।
মুসা (আঃ)-এর পরামর্শে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বারবার আল্লাহর দরবারে ফিরে যান এবং নামাজের সংখ্যা কমানোর আবেদন করেন। অবশেষে এটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নির্ধারণ করা হয়। তবে আল্লাহ (সুবঃ) এমন প্রতিশ্রুতি দেন যে, যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তাকে ৫০ ওয়াক্ত নামাজের সমান সওয়াব প্রদান করা হবে। এই ঘটনা নামাজের গুরুত্ব ও আল্লাহর অসীম দয়া এবং ক্ষমার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি মুসলিম উম্মাহকে ইবাদতের প্রতি উৎসাহী হতে এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে।
শিক্ষা ও গুরুত্ব
শবে-মেরাজ ইসলামি ধর্মে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ রাত, যা মুসলমানদের জন্য এক অন্যতম শিক্ষার উৎস। এটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আসমানে মহিমান্বিত ভ্রমণের ঘটনা, যেখানে তিনি আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছিলেন। শবে-মেরাজের ঘটনাটি মুসলমানদের জন্য আধ্যাত্মিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, এবং এর মধ্য দিয়ে মেরাজ থেকে শেখার ১৪টি শিক্ষা উপলব্ধি হতে পারে, যেগুলো জীবনযাত্রায় অনুসরণ করা উচিত। এখানে এই শিক্ষাগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. নামাজের গুরুত্ব: শবে-মেরাজের রাতে নামাজ ফরজ করা হয়েছিল, যা আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ এবং তাঁর নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার একটি অপরিহার্য অংশ এবং এটি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের এক পদ্ধতি।
২. আখলাক বা নৈতিকতা: নবী (সা.)-এর সঙ্গে দেখা করার মাধ্যমে আমাদের চরিত্রের উন্নতি এবং নৈতিকতার গুরুত্ব উপলব্ধি হয়। সৎ, নিষ্ঠাবান এবং সহানুভূতির মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
৩. আখিরাতের বিশ্বাস: শবে-মেরাজে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস গভীরতর হয়। এই দৃশ্য আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, দুনিয়ার পরিণতি চিরস্থায়ী নয় এবং পরকালীন জীবন গুরুত্বপূর্ণ।
৪. তাওহিদ: শবে-মেরাজে আল্লাহর একত্ববাদের গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রতিভাত হয়। এটি আমাদের মনে প্রতিস্থাপন করে যে আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি বা ক্ষমতা নেই এবং আমাদের জীবনের সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছার অধীন।
৫. সবর (ধৈর্য): নবী (সা.)-এর জীবনে বিভিন্ন সংকটের সময় ধৈর্যের প্রদর্শন আমাদেরকে কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করার শিক্ষা দেয়। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে আমাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে।
৬. ইলমের গুরুত্ব: শবে-মেরাজের ঘটনাটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইলম বা জ্ঞান লাভের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নিদর্শনগুলো বুঝতে পারি। শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার মাধ্যমে আমরা জীবনকে ভালোভাবে গড়তে পারি।
৭. সময়মত ইবাদত: নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত আল্লাহর নির্দেশ পালন করার মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সুসংহত করতে সাহায্য করে। এটি প্রতিদিনের একটি জরুরি অংশ হওয়া উচিত, যা আমরা সময়মত পালন করি।
৮. সমতা: সকল নবীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সকল ধর্ম, জাতি, ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধাবোধ তৈরী হয়।
৯. মুসলিম উম্মাহর ঐক্য: শবে-মেরাজের রাতে বাইতুল মাকদিসে সকল নবীর সঙ্গে একত্রিত হওয়া আমাদের উম্মাহর ঐক্য এবং সমবেদনা শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে এবং একে অপরকে সহায়তা করতে উৎসাহিত করে।
১০. পরম করুণাময় আল্লাহর নৈকট্য: শবে-মেরাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ সুযোগ প্রদান করা হয়েছে, যা মুসলমানদের জন্য একটি বিরল এবং মহামূল্যবান সম্মান।
১১. ইবাদতের প্রতি মনোযোগ: নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা আমাদের জীবনে আত্মিক শান্তি এবং সান্ত্বনা আনতে সাহায্য করে।
১২. আল্লাহর নিদর্শন: আসমান ও পৃথিবীকে আল্লাহর শক্তি ও নিয়ন্ত্রণের নিদর্শন হিসেবে দেখতে পারা আমাদের ঈমানকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
১৩. তাওবা: শবে-মেরাজ আমাদের তাওবার গুরুত্ব উপলব্ধি করায়, যার মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে ফিরে আসতে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।
১৪. ধৈর্য ও দৃঢ়তা: নবী (সা.)-এর জীবনের কষ্ট ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ধৈর্য ও দৃঢ়তার শিক্ষা পাই।
এই ১৪টি শিক্ষা শবে-মেরাজের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের জীবনে একটি বিশেষ রূপান্তরের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস, আত্মসমর্পণ, এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
শেষ কথা
শেষ কথা হিসেবে, শবে-মেরাজ ইসলামের একটি ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা আমাদের বিশ্বাস এবং আচরণকে আরও সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। যদিও নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এই রাত উদযাপন করেননি, তবে এটি মুসলমানদের জন্য একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়ায় আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর করার এবং তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার। এই রাতে বিশেষভাবে ইবাদত করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা, এবং তাঁর মহিমা ও নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত। এই রাতটি আমাদের জন্য আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, তাওহিদ এবং আখিরাতের প্রতি গভীর বিশ্বাস স্থাপন করার এক চমৎকার মুহূর্ত।