তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধান দাবি: সচেতন ছাত্রসমাজের বক্তব্য

- Update Time : ০৯:০৮:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ১০৭ Time View
তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের স্থায়ী ও ন্যায়ভিত্তিক সমাধান দাবিতে সচেতন ছাত্রসমাজ নামে একটি সংগঠন গত সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের ভূমিকা, তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের বর্তমান অবস্থান এবং সংকটের গভীরতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এই প্রতিবেদনে সেসব মূল পয়েন্ট এবং দাবি তুলে ধরা হলো:
১. সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন:
- স্থান: জাতীয় প্রেস ক্লাব, জহুর হোসেন চৌধুরী হল
- তারিখ: সোমবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
- প্রধান বক্তা: জুবাইরুল ইসলাম (মুখ্য সংগঠক, সচেতন ছাত্রসমাজ)
- অন্যান্য উপস্থিত: নজরুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, রোমান হোসেনসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যগণ
২. সরকারের ভূমিকা:
- গত কয়েক সপ্তাহে তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে।
- প্রজ্ঞাপনে তারিখ নির্ধারণ:
- প্রথম পর্ব: মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজন করবেন।
- দ্বিতীয় পর্ব: মাওলানা সাদ অনুসারীরা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজন করবেন।
- যদিও এই তারিখগুলো সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, কিছু সময় পর সংকটের পরিস্থিতি আবারও জটিল হয়ে ওঠে।
৩. সরকারি প্রজ্ঞাপনের
- মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা: সরকারী প্রজ্ঞাপনের শর্ত ভঙ্গ করে ৩, ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন।
- মাওলানা সাদ অনুসারীরা: ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ইজতেমা আয়োজনের কথা জানিয়েছে, যদিও সরকারিভাবে কোনো প্রজ্ঞাপন এখনও জারি হয়নি।
- এটি সরকারি সিদ্ধান্তের সাথে সাংঘর্ষিক এবং বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
৪. সরকারের অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি:
- সরকারের অস্পষ্টতা এবং অদৃশ্য প্রজ্ঞাপন পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। এর ফলে, ধর্মীয় ইজতেমা আয়োজনের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি এবং সংঘাত তৈরি হচ্ছে।
- এটি জাতিকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে এবং দেশের শান্তি ও ধর্মীয় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৫. সচেতন ছাত্রসমাজের দাবি:
- সরকারকে আহ্বান: সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্পষ্ট এবং দিকনির্দেশনামূলক পরিপত্র জারি করতে হবে, যাতে উভয় পক্ষই তাদের ধর্মীয় আয়োজন সুষ্ঠুভাবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারে।
- সংকটের স্থায়ী সমাধান: তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের ইনসাফ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাধান দ্রুত প্রবর্তন করতে হবে।
- যদি সরকার এই সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়, তাহলে সচেতন ছাত্রসমাজ বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
৬. সংকটের গভীরতা:
- তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা শুধু বাংলাদেশে নয়, বরং বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সংকট যদি সমাধান না হয়, তবে এটি ধর্মীয় অস্থিরতা এবং দেশের শান্তির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
৭. সামাজিক শান্তি ও ধর্মীয় সমঝোতার প্রয়োজন:
- সরকারের যদি এই সংকট সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ না হয়, তাহলে এটি দেশের সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় বাধা সৃষ্টি করবে।
- সচেতন ছাত্রসমাজ সরকারের কাছে একটি স্থায়ী সমাধানের দাবী জানায়, যা দেশের শান্তি এবং ধর্মীয় ঐক্যের জন্য উপকারী হবে।
৮. চূড়ান্ত আহ্বান:
- সচেতন ছাত্রসমাজ সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা উভয় পক্ষের জন্য একটি সুস্পষ্ট, শান্তিপূর্ণ এবং সমানাধিকার ভিত্তিক সমাধান প্রবর্তন করে।
- এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে ধর্মীয় পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে একটি শান্তিপূর্ণ ও সমঝোতামূলক পরিস্থিতি তৈরি হবে।
৯. সমাজে বৃহত্তর প্রভাব:
- তাবলিগ জামাতের সংকট শুধু দেশীয় পরিস্থিতি নয়, বরং মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তর ধর্মীয় পরিবেশে প্রভাব ফেলছে।
- এই সংকট যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা শুধু তাবলিগ জামাতের নিজস্ব সুনাম এবং প্রভাবকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং পুরো দেশ এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করবে।
১০. দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিকল্প কর্মসূচি:
- সচেতন ছাত্রসমাজ জানায়, যদি সরকার তাদের দাবি মেনে না নেয়, তবে তারা বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে সরকারকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা হবে।
- সংগঠনটি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে স্থায়ী শান্তি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এগুলো থেকে স্পষ্ট যে, সচেতন ছাত্রসমাজ তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী দাবি করেছে। তাদের লক্ষ্য দেশের ধর্মীয় পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা।
Please Share This Post in Your Social Media

তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধান দাবি: সচেতন ছাত্রসমাজের বক্তব্য

তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের স্থায়ী ও ন্যায়ভিত্তিক সমাধান দাবিতে সচেতন ছাত্রসমাজ নামে একটি সংগঠন গত সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের ভূমিকা, তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের বর্তমান অবস্থান এবং সংকটের গভীরতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এই প্রতিবেদনে সেসব মূল পয়েন্ট এবং দাবি তুলে ধরা হলো:
১. সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন:
- স্থান: জাতীয় প্রেস ক্লাব, জহুর হোসেন চৌধুরী হল
- তারিখ: সোমবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
- প্রধান বক্তা: জুবাইরুল ইসলাম (মুখ্য সংগঠক, সচেতন ছাত্রসমাজ)
- অন্যান্য উপস্থিত: নজরুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, রোমান হোসেনসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যগণ
২. সরকারের ভূমিকা:
- গত কয়েক সপ্তাহে তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে।
- প্রজ্ঞাপনে তারিখ নির্ধারণ:
- প্রথম পর্ব: মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজন করবেন।
- দ্বিতীয় পর্ব: মাওলানা সাদ অনুসারীরা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজন করবেন।
- যদিও এই তারিখগুলো সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, কিছু সময় পর সংকটের পরিস্থিতি আবারও জটিল হয়ে ওঠে।
৩. সরকারি
- মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা: সরকারী প্রজ্ঞাপনের শর্ত ভঙ্গ করে ৩, ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন।
- মাওলানা সাদ অনুসারীরা: ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ইজতেমা আয়োজনের কথা জানিয়েছে, যদিও সরকারিভাবে কোনো প্রজ্ঞাপন এখনও জারি হয়নি।
- এটি সরকারি সিদ্ধান্তের সাথে সাংঘর্ষিক এবং বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
৪. সরকারের অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি:
- সরকারের অস্পষ্টতা এবং অদৃশ্য প্রজ্ঞাপন পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। এর ফলে, ধর্মীয় ইজতেমা আয়োজনের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি এবং সংঘাত তৈরি হচ্ছে।
- এটি জাতিকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে এবং দেশের শান্তি ও ধর্মীয় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৫. সচেতন ছাত্রসমাজের দাবি:
- সরকারকে আহ্বান: সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্পষ্ট এবং দিকনির্দেশনামূলক পরিপত্র জারি করতে হবে, যাতে উভয় পক্ষই তাদের ধর্মীয় আয়োজন সুষ্ঠুভাবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারে।
- সংকটের স্থায়ী সমাধান: তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের ইনসাফ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাধান দ্রুত প্রবর্তন করতে হবে।
- যদি সরকার এই সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়, তাহলে সচেতন ছাত্রসমাজ বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
৬. সংকটের গভীরতা:
- তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা শুধু বাংলাদেশে নয়, বরং বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সংকট যদি সমাধান না হয়, তবে এটি ধর্মীয় অস্থিরতা এবং দেশের শান্তির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
৭. সামাজিক শান্তি ও ধর্মীয় সমঝোতার প্রয়োজন:
- সরকারের যদি এই সংকট সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ না হয়, তাহলে এটি দেশের সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় বাধা সৃষ্টি করবে।
- সচেতন ছাত্রসমাজ সরকারের কাছে একটি স্থায়ী সমাধানের দাবী জানায়, যা দেশের শান্তি এবং ধর্মীয় ঐক্যের জন্য উপকারী হবে।
৮. চূড়ান্ত আহ্বান:
- সচেতন ছাত্রসমাজ সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন তারা উভয় পক্ষের জন্য একটি সুস্পষ্ট, শান্তিপূর্ণ এবং সমানাধিকার ভিত্তিক সমাধান প্রবর্তন করে।
- এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে ধর্মীয় পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে একটি শান্তিপূর্ণ ও সমঝোতামূলক পরিস্থিতি তৈরি হবে।
৯. সমাজে বৃহত্তর প্রভাব:
- তাবলিগ জামাতের সংকট শুধু দেশীয় পরিস্থিতি নয়, বরং মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তর ধর্মীয় পরিবেশে প্রভাব ফেলছে।
- এই সংকট যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা শুধু তাবলিগ জামাতের নিজস্ব সুনাম এবং প্রভাবকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং পুরো দেশ এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করবে।
১০. দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিকল্প কর্মসূচি:
- সচেতন ছাত্রসমাজ জানায়, যদি সরকার তাদের দাবি মেনে না নেয়, তবে তারা বিকল্প কর্মসূচি গ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে সরকারকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা হবে।
- সংগঠনটি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে স্থায়ী শান্তি এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এগুলো থেকে স্পষ্ট যে, সচেতন ছাত্রসমাজ তাবলিগ জামাতের চলমান সংকটের সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী দাবি করেছে। তাদের লক্ষ্য দেশের ধর্মীয় পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা।