সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ফ্যাসিবাদকালে বেঁচে থাকা ছিল কৌতুকময়

বিল্লাল হোসেন
  • Update Time : ০৭:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১০৬ Time View

Mustafa sarwar faruki

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

গুণী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, যিনি তার চমকপ্রদ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য পরিচিত, তার সামাজিক মাধ্যমের কার্যকলাপের জন্যও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে কখনো পিছপা হন না, এবং তার মতামতগুলো সবসময়েই তীক্ষ্ণ ও সাহসী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনার দিন থেকেই ফারুকী সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ছিলেন এবং গণঅভুথ্যানের পরও নানা ইস্যুতে তিনি জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী।

সম্প্রতি, তিনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কটাক্ষের সুরে মন্তব্য করেন, “আমাকে উপদেষ্টা করা এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী প্রোপাগান্ডু লীগ যেভাবে আমার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ফ্যাসিবাদের পতনে আমার বিশাল ভূমিকা আছে। তাই ‘ফ্যাসিবাদের পুচ্ছে আগুন’ কোটায় আমাকে উপদেষ্টা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।” ফারুকী স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মী নন; বরং তিনি আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ের ভালো কাজের প্রশংসা এবং খারাপ কাজের নিন্দা করতে পারেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ফ্যাসিবাদকালে আমাদের বেঁচে থাকা ছিল বড় কৌতুকময়। কায়দা-কানুন করে বেঁচে থাকতে হতো। সরকারের সমালোচনা করলে এক পোস্টের বিপরীতে তিনটি প্রশংসা পোস্ট দিতে হতো। প্রধানমন্ত্রীকে বাদ রেখে সমালোচনা করতে হতো, নাহলে আপনার সিনেমা আটকে যাবে, যা নিঃসন্দেহে অন্যায়। সেই সিনেমা ছাড়ানোর জন্য তদবির করতে হবে, এবং ছাড়ানোর পর ধন্যবাদ জানাতে হবে। জীবনের এই নানাবিধ কৌতুকময় অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আমার কাজের মধ্যে প্রতিফলিত হবে।”

ফারুকী মন্তব্য করেন যে, বর্তমান সরকার তাদের দুর্নীতি, টেন্ডার বাণিজ্য, এবং চুরিচামারির জন্য পরিচিত, কিন্তু তাদের রাগ আমাদের ওপর। কেন আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামলাম, এই ক্ষোভ তাদের মধ্যে গভীর। তিনি বলেন, “ওরা জানে আমাদের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, কিন্তু আমাদের প্রতিরোধে তাদের মনে এক গভীর ক্ষোভ রয়েছে। তাদের জন্য অবশ্যই আত্মশুদ্ধির পথে হাঁটার সময় এসেছে।”

ফারুকীর এই মন্তব্যগুলো দেশের রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন করে এবং বর্তমান সময়ে সৃজনশীল মানুষের অবস্থা ও তাদের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে একটি প্রাসঙ্গিক আলোকপাত করে। তার কথা বলার এই ধরণ এবং স্বর যেন এক নতুন প্রেরণা দেয় অন্য নির্মাতাদের, তাদের কাজের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে চিত্রিত করার জন্য।

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

বিল্লাল হোসেন

বিল্লাল হোসেন, একজন প্রজ্ঞাবান পেশাজীবী, যিনি গণিতের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি সমৃদ্ধ ও বহুমুখী ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। তার আর্থিক খাতে যাত্রা তাকে নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে গেছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকিং Inc. এবং ব্যাংক-আল-বিলাদে বিদেশী সম্পর্ক ও করেসপন্ডেন্ট মেইন্টেনেন্স অফিসার হিসেবে। প্রথাগত অর্থনীতির গণ্ডির বাইরে, বিল্লাল একজন প্রখ্যাত লেখক ও বিশ্লেষক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে মননশীল কলাম ও গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। তার দক্ষতা বিস্তৃত বিষয় জুড়ে রয়েছে, যেমন অর্থনীতির জটিলতা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট, রেমিটেন্স, রিজার্ভ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত দিক। বিল্লাল তার লেখায় একটি অনন্য বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসেন, যা ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে অর্জিত বাস্তব জ্ঞানকে একত্রিত করে একাডেমিক কঠোরতার সাথে। তার প্রবন্ধগুলো শুধুমাত্র জটিল বিষয়গুলির উপর গভীর বোঝাপড়ার প্রতিফলন নয়, বরং পাঠকদের জন্য জ্ঞানপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যা তত্ত্ব ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। বিল্লাল হোসেনের অবদান তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে যে, তিনি আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের জটিলতাগুলি উন্মোচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি বিস্তৃত এবং আরও সূক্ষ্ম বোঝাপড়ার দিকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ফ্যাসিবাদকালে বেঁচে থাকা ছিল কৌতুকময়

Update Time : ০৭:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

গুণী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, যিনি তার চমকপ্রদ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য পরিচিত, তার সামাজিক মাধ্যমের কার্যকলাপের জন্যও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে কখনো পিছপা হন না, এবং তার মতামতগুলো সবসময়েই তীক্ষ্ণ ও সাহসী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সূচনার দিন থেকেই ফারুকী সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় ছিলেন এবং গণঅভুথ্যানের পরও নানা ইস্যুতে তিনি জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী।

সম্প্রতি, তিনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কটাক্ষের সুরে মন্তব্য করেন, “আমাকে উপদেষ্টা করা এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী প্রোপাগান্ডু লীগ যেভাবে আমার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ফ্যাসিবাদের পতনে আমার বিশাল ভূমিকা আছে। তাই ‘ফ্যাসিবাদের পুচ্ছে আগুন’ কোটায় আমাকে উপদেষ্টা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।” ফারুকী স্পষ্ট করে বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মী নন; বরং তিনি আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ের ভালো কাজের প্রশংসা এবং খারাপ কাজের নিন্দা করতে পারেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ফ্যাসিবাদকালে আমাদের বেঁচে থাকা ছিল বড় কৌতুকময়। কায়দা-কানুন করে বেঁচে থাকতে হতো। সরকারের সমালোচনা করলে এক পোস্টের বিপরীতে তিনটি প্রশংসা পোস্ট দিতে হতো। প্রধানমন্ত্রীকে বাদ রেখে সমালোচনা করতে হতো, নাহলে আপনার সিনেমা আটকে যাবে, যা নিঃসন্দেহে অন্যায়। সেই সিনেমা ছাড়ানোর জন্য তদবির করতে হবে, এবং ছাড়ানোর পর ধন্যবাদ জানাতে হবে। জীবনের এই নানাবিধ কৌতুকময় অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আমার কাজের মধ্যে প্রতিফলিত হবে।”

ফারুকী মন্তব্য করেন যে, বর্তমান সরকার তাদের দুর্নীতি, টেন্ডার বাণিজ্য, এবং চুরিচামারির জন্য পরিচিত, কিন্তু তাদের রাগ আমাদের ওপর। কেন আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামলাম, এই ক্ষোভ তাদের মধ্যে গভীর। তিনি বলেন, “ওরা জানে আমাদের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, কিন্তু আমাদের প্রতিরোধে তাদের মনে এক গভীর ক্ষোভ রয়েছে। তাদের জন্য অবশ্যই আত্মশুদ্ধির পথে হাঁটার সময় এসেছে।”

ফারুকীর এই মন্তব্যগুলো দেশের রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন করে এবং বর্তমান সময়ে সৃজনশীল মানুষের অবস্থা ও তাদের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে একটি প্রাসঙ্গিক আলোকপাত করে। তার কথা বলার এই ধরণ এবং স্বর যেন এক নতুন প্রেরণা দেয় অন্য নির্মাতাদের, তাদের কাজের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে চিত্রিত করার জন্য।

শেয়ার করুনঃ
Pin Share